Back

BJRI Tosha Jute 3 (OM-1)

প্রযুক্তির নাম

:

বিজেআরআই তোষা পাট (ওএম-)


বিজেআরআই তোষা পাট (ওএম-)

অবমুক্তির সন

:

1995

উদ্ভাবনের পদ্ধতি

:

বিশুদ্ধ সারি  নিবার্চন (পিএলএস)

প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্য

:

·        গাছ সম্পূর্ণ সবুজ, আলোক সংবেদনশীলতা কম, আগাম বপনযোগ্য, আঁশ উন্নতমানের, পাতার আকার তুলনামুলকভাবে বেশ বড় এবং ডিম্বাকৃতির, পাতা নরম এবং উপরিপৃষ্ঠ উজ্জ্বল চকচকে ও মসৃণ

·        ফল পরিপক্ব হলেই ফেটে বীজ পড়ে যায় না বীজের রঙ গাঢ় খয়েরি

·         আগাম ফুল আসে নাকাটিংস কম হয় এবং তিন ফসলী শস্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা যায়

·        উচ্চ ফলনশীল জাত এবং স্থানীয়ভাবে এটিরানী তোষানামে পরিচিত

প্রযুক্তির উপযোগীতা

:

জাতটি সারাদেশব্যাপী পানি নিষ্কাশনের সুবিধাসহ মধ্যম উঁচু থেকে উঁচু, অর্গানিক ম্যাটার সমৃদ্ধ উর্বর জমিতে চাষ করা যায়

বপনের সময়

:

২৫ ফাল্গুন-৩০ বৈশাখ (10 মার্চ – 30 এপ্রিল)

জীবন কাল

:

১৪০-১৬০ দিন বয়সে ফুল আসে এবং ১১০ দিন বয়সে জাতটি কর্তন করা যায়

প্রযুক্তির চাষাবাদ পদ্ধতি

:

বীজ বপন

জাতটি ছিটিয়ে এবং সারি করে উভয় পদ্ধতিতে বপন করা যায় ছিটিয়ে বপনের জন্য হেক্টর প্রতি ৬.২৫-.৫০ কেজি (প্রতি শতাংশে ২৫-৩০ গ্রাম) এবং সারিতে বপনের জন্য ৫-৬ কেজি (প্রতি শতাংশে ২৫ গ্রাম) বীজ প্রয়োজন সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সে.মি.; গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৫-৬ সে.মি. এবং ভালো ফলন পেতে প্রতি বর্গমিটার জায়গায় ৩৫-৪০টি (বিঘা প্রতি ৪.-.০ হাজার) গাছ রাখতে হবে বীজ বপনের সময় জমিতে জ্যো (পরিমিত রসসহ ঝুরঝুরে মাটি) অবস্থা থাকতে হবে

সারের মাত্রা প্রয়োগ পদ্ধতি

হেক্টর প্রতি ইউরিয়া-১৮০ কেজি, টিএসপি-৫০ কেজি, এমওপি-৪০ কেজি, জিপসাম-৯৫ কেজি এবং দস্তা-১১ কেজি হারে প্রয়োগ করতে হবে তবে গোবর বা অন্যান্য জৈবসার ব্যবহার করলে রাসায়নিক সারের ব্যবহার আনুপাতিক হারে কমিয়ে আনতে হবে জমি তৈরীর সময় অর্ধেক ইউরিয়া অন্যান্য সার পূর্ণমাত্রায় মাটির সাথে ভাল করে মিশিয়ে দিতে হবে অবশিষ্ট ইউরিয়া ৪০-৪৫ দিন পর প্রথম নিড়ি দেওয়ার পর উপরি প্রয়োগ করতে হবে ২য় পর্যায়ে সার প্রয়োগের সময় মাটিতে পর্যাপ্ত রস থাকা প্রয়োজন

রোগ-বালাই দমন

রোগবালাই পোকামাকড়ের তেমন অক্রমণ পরিলক্ষিত হয় না তা সত্বেও পাটের সাধারণ রোগ হিসাবে আগামরা, কান্ডপচা, চারা মড়ক, গোড়া পঁচা, কান্ড পঁচা, শুকনা ক্ষত রোগ দেখা দিলে প্রাথমিকভাবে রোগাক্রান্ত গাছসমূহ উপড়ে ফেলে দ্বিতীয় পর্যায়ের আক্রমণ রোধ করার জন্য ম্যানকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক (ডায়থেন এম-৪৫ বা ইন্ডোফিল এম-৪৫ বা ম্যানার এম-৪৫) প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম হারে মিশিয়ে গাছের গোড়ার মাটিতে পর পর ২-৩ দিন স্প্রে করলে এ রোগের আক্রমণ কমানো সম্ভবপাট ফসলের বর্তমানে প্রধান বালাই হচ্ছে মাকড় (হলুদ এবং লাল) এবং ছাতরা পোকা মাকড়ের আক্রমণ হলে সালফার জাতীয় কীটনাশক (সালফার ৮০ ডব্লিউপি/ কুমুলাস ৮০ ডিএফ), সানমেকটিন ১০৮ ইসি বা অ্যামবুশ . ইসি বা টাফগর গাছের উপরের দিকের কচি পাতার নীচের পৃষ্ঠে ০৭ দিন পরপর - বার স্প্রে করা যেতে পারে ছাতরা পোকার আক্রমণে সাবান/ডিটারজেন্ট এর দ্রবন এবং পরে রিপকর্ড ১০ ইসি, সিমবুশ ১০ ইসি (৫ মি.লি./লি. হারে) এবং চেলে পোকা, বিটল পোকা আক্রমণেও এই কীটনাশকগুলো প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায় পাটবীজ বপনের পূর্বে ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে ভিটাভেক্স-২০০ বা প্রোভেক্স-২০০ (.%) এর গ্রাম অথবা ১২৫ গ্রাম রসুন বাটা বা বিষকাটালী বা নিমের থেতলানো উপাদান প্রতি কেজি বীজের সাথে মিশিয়ে বীজ শোধন করা যেতে পারেএতে করে রোগ-বালাই কম হবেএছাড়াও, জমি তৈরীর সময় জমিতে ছত্রাকনাশক (ম্যানকোজেব) এবং কৃমিনাশক (ফুরাডান) প্রয়োগ করলে অনেক ভালো ফল পাওয়া যায়

আন্ত:পরিচর্যা

আঁশের অধিক ফলন পাওয়ার জন্য পাট ফসলের প্রাথমিক পরিচর্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জমি তৈরির সময় নির্দেশিত মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে চারা গজাঁনোর পর প্রয়োজনীয় নিড়ি দিতে হবে চারা পাতলা করতে হবে চারার বয়স ৪০-৪৫ দিন হলে জমিতে নিড়ানি দিয়ে, প্রয়োজনে চারা পাতলা করে দিতে হবেঅফ টাইপ গাছ তুলে ফেলা বা রগিং করে দিতে হবে সার দেওয়ার সময় জমিতে পর্যাপ্ত রস থাকা জরুরী এতে গাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় এবং ফলন বাড়ে খরা দীর্ঘায়িত হলে পরিমাণমতো সেঁচ দিতে হবে

ফসল কর্তনের সময়

বপন করার ১০০-১১০ দিন পর প্রয়োজনমত যে কোন সময়ে কর্তন করে আঁশের ভাল ফলন পাওয়া যায়

বীজ উৎপাদন

নির্দেশিত সময়ে বীজ বপন করলে তোষা পাটের মাতৃগাছ থেকে বীজ উৎপাদন খুব একটা ভালো হয় নাতাই গাছের কান্ডের টপ কাটিং এবং নাবী বীজ পদ্ধতিতে পাটবীজ উৎপাদন করা যায়

টপ কাটিং পদ্ধতি: মাতৃগাছ থেকে ১০০ দিন বয়সে ডগা থেকে মিটার পরিমাণ ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে নিয়ে তা থেকে ২৫-৩০ সে.মি. সাইজের ছোট ছোট টপ কাটিং  (কম্পক্ষে - টি করে নোড বা গিটসহ) তৈরী করে নিতে হবেপ্রতিটি কাটিং এর গোড়ার দিকে ধারালো ছুরি বা বটি বা ব্লেড দিয়ে স্ল্যান্টিংভাবে কেটে প্রস্তুত করতে হবে যেন কোনভাবে থেতলে না যায়এরপর, কাটিং এর গোড়া ছত্রাকনাশকের (ডায়থেন এম-৪৫ বা ইন্ডোফিল এম-৪৫) .% দ্রবণে ভিজিয়ে নিয়ে রসযুক্ত জমিতে উত্তরদিক বরাবর ৪৫ ডিগ্রী কোণে কাত করে লাগালে তা থেকে শাখা-প্রশাখা বের হয়ে অধিক বীজ উৎপাদন হয়

নাবী বীজ পদ্ধতি: পাট একটি আলোক সংবেদনশীল উদ্ভিদএর বীজ দেরীতে অর্থাৎ আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে বপন করলে .-. মাসের মধ্যে ফুল আসে এবং বীজ হয়তবে নাবী বীজের চেয়ে টপ কাটিং পদ্ধতিতে উৎপাদিত বীজের স্বাস্থ্য গুণাগুণ ভালো বলে পরীক্ষিত

বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও প্রয়োজনে জমিতে রসের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবেবীজ পরিপক্ব হলে সাবধানে হার্ভেস্ট করে রোদে শুকিয়ে ভালোভাবে সংরক্ষণ করতে হবে যা পরবর্তীতে পাট চাষে ব্যবহার করা যাবেবসতবাড়ির আশেপাশেও পতিত জমিতে পাট বীজ করা যায়

পুষ্টি গুণাগুণ (শাক এবং পানীয় হিসেবে ব্যবহার)

শাক হিসেবে ব্যবহার: এটি মিষ্টি পাট শাক হিসেবে ব্যবহার্য্ যার রয়েছে বহু ধরনের ঔষধি গুণাগুণএর কচি ডগা পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায় যা ভিটামিন মিনারেল সমৃদ্ধতবে, শাক হিসেবে নেওয়ার আগে ১৫-২০ দিন কোন ধরনের কীটনাশক বা ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করা যাবে নামধ্যম বয়সী গাছের পাতাও কুচি কুচি করে কেটে শুকিয়ে শাক হিসেবে বা চূর্ণ করে পাউডার জাতীয় খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়

পাট পাতার পানীয়: পাট পাতা ভিটামিন এবং মিনারেলের পামাপাশি বিভিন্ন ধরনের এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধমধ্য বয়সী পাট পাতা তুলে নিয়ে শুকনো ছায়াযুক্ত পরিবেশে শুকিয়ে চূর্ণ করে এর সাথে স্টেভিয়া পাতার চূর্ণ যোগ করে সুস্বাদু পানীয় বা পাট পাতার চা হিসেবে খাওয়া যায় যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এবং অর্থনৈতিকভাবেও সাশ্রয়ী

ফলন (আঁশ)

:

হেক্টর প্রতি ২.50-2.80 টন বা বিঘা প্রতি 10 – 11.10 মন