BJRI Kenaf 4 (Red Kenaf)
1. প্রযুক্তির নাম | : | বিজেআরআই কেনাফ 4 (লাল কেনাফ) | |
2. অবমুক্তের সন | : | 2017 | |
3. উদ্ভাবণের পদ্ধতি | : | বিশুদ্ধ সারি নির্বাচন | |
4. প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্য | : | ü কান্ড লাল, পাতার রঙ খয়েরি সবুজ ও করতলাকৃতি এবং পাতার বোঁটার উপরিভাগ লাল রঙ। ü ফুলের রঙ হাল্কা ক্রীম রঙের মাঝখানে গাঢ় খায়েরী রঙ। ü ফল ডিম্বাকৃতি, বীজ তিন কোনাকৃতি ধুসর বর্ণের। ü আঁশের মান ভাল এবং রং মাখন সাদা। | |
5. প্রযুক্তির উপযোগিতা | : | দ্রুত বর্ধনশীল, দীর্ঘ বপনকাল, জলাবদ্ধতা সহিষ্ণু, অধিক ফলনশীল ও রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা কেনাফের অন্যান্য জাতের তুলনায় বেশী। চরাঞ্চল ও উপকূলীয় অঞ্চলে বপন উপযোগী। | |
6. উৎপাদনের মৌসুম | : | খরিফ-1 | |
7. বপন সময় | : | চৈত্রের প্রথম- বৈশাখের শেষ (15 মার্চ- ১৫ মে) | |
8. বীজের হার (কেজি/হেক্টর) | : | সারিতে 15-18 কেজি/হেক্টর এবং ছিটিয়ে 20-25 কেজি/হেক্টর | |
৯. প্রযুক্তির চাষাবাদ পদ্ধতি | : | জমি তৈরী ও বীজ বপন: জমির প্রকার ভেদে আড়াআড়ি 3-5 বার গভীর চাষের পর 2-3 বার মই দিয়ে জমির মাটি মিহি করা প্রয়োজন। এছাড়া আশানুরূপ বীজ গজানোর লক্ষ্যে জমি আগাছামুক্ত করা প্রয়োজন। ছিটিয়ে ও সারিতে উভয় পদ্ধতিতে বীজ বপন করা যায়। প্রতি হেক্টরে 3.0-3.5 লক্ষ গাছ রাখা প্রয়োজন। সারিতে বপন করলে সারি থেকে সারির দূরত্ব 30 সে.মি. এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব হবে 6-7 সে.মি.। সারিতে বীজ বপন করলে গাছের পরিচর্যা করা সহজ হয় এবং এত ফলনও বৃদ্ধি পায়।
সারের পরিমান ও প্রয়োগ পদ্ধতি:
প্রতি হেক্টর জমির জন্য ইউরিয়া 130 কেজি, টিএসপি 25 কেজি এবং এমওপি 40 কেজি পরিমাণ সার দরকার। তবে শুকনো গোবর সার ব্যবহার করা হলে প্রতি হাজার কেজি শুকনো গোবর সার ব্যবহারের জন্য 11 কেজি ইউরিয়া, 10 কেজি টিএসপি এবং 10 কেজি এমওপি সার নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম প্রয়োগ করতে হবে। · গোবর সার অবশ্যই বীজ বপনের 2-3 সপ্তাহ পূর্বে জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। · বীজ বপনের দিন নির্ধারিত মাত্রার অর্ধেক পরিমান ইউরিয়া প্রথম কিস্তি হিসাবে এবং সম্পূর্ণ মাত্রার টিএসপি এবঙ এমওপি সার জমিতে শেষ চাষে প্রযোগ করে মই দিয়ে মাটির সাথে ভাল করে মিশিয়ে দিতে হবে। · দ্বিতীয় কিস্তি ইউরিয়া সার অর্থাৎ নির্ধারিত মাত্রার বাকী অর্ধেক ইউরিয়া সার গাছের 45 দিন বয়সে সামান্য শুকনো মাটির সাথে মিশিয়ে জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন প্রযোগকালীন জমিতে পর্যাপ্ত রস থাকে এবং প্রয়োগকৃত সার গাছের কচি পাতা ও ডগায় না লাগে।
আন্ত:পরিচর্যা: · বীজ বপনের এক হতে দুই সপ্তাহ পর জমির জো অনুযায়ী আচড়া দিতে হবে। এ সময় চারার সংখ্যা ঘন হলে প্রাথমিক ভাবে চারা পাতলা করা যায়। · গাছের বয়স 40-45 দিনের মধ্যে একবার নিড়ানী দিয়ে আগাছা পরিস্কার করা হয় এবং সুস্থ সবল গাছ রেখে দুর্বল ও চিকন গাছ তুলে ফেলতে হবে। · সাধারনতঃ এ জাতে রোগ বালাই এর আক্রমন কম তবে গাছে রোগ বালাই দেখা দিলে রোগ বালাই এর আক্রমন অনুযায়ী ঔষুধ প্রয়োগ করতে হবে। · অধিক আঁশ ফসলের জন্য প্রাথমিক পরিচর্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিড়ানী ও পাতলা করনে অবহেলা করলে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। ফলে ফলন কমে যায়। ফসল সংগ্রহ, শুকানো ও গুদাম জাতকরণ:
গাছের বয়স 110 থেকে 120 দিন হলে এ জাতের গাছ কাটা যায় এবং ফলন ভাল পাওয়া যায়। চিকন ও মোটা গাছ আলাদা ভাবে আটি বেঁধে পাতা ঝরিয়ে গোড়া 3/4 দিন এক ফুট পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। পরে পরিস্কার পানিতে জাক দিতে হবে। জাক খুব পুরু না করে খড় বা কচুরী পানা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হবে। আঁশ যাতে বেশী পচে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ আঁশ যত পরিস্কার করে ধোয়া যায় ততই উজ্জ্বল হয়। ধোয়া আঁশ বাঁশের আড়ে শুকানো উচিত। মাটিতে শুকালে ময়লা হয়ে আঁশের মান খারাপ হয়। আঁশ শুকানোর পর বান্ডেল বেঁধে গুদামজাত ও বাজারজাত করা হয়। কাগজ শিল্পে ব্যবহারের জন্য বায়োমাস হিসেবে এ ফসল কাটা হলে হাল্কা আঁটি বেঁধে দাঁড় করিয় রাখতে হবে। এত পাতা ঝরার সঙ্গে সঙ্গে কান্ডে জলীয় বাষ্প কমে যাবে এবং কান্ড পচা প্রতিহত হবে। বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ: আঁশের জন্য বপনকৃত গাছ থেকে আশানুরূপ বীজ পাওয়া সম্ভব নয়। তাই কাঙ্খিত পরিমান বীজ উৎপাদনের জন্য তিনটি পদ্ধতিতে নাবী কেনাফ বীজ উৎপাদন করা যায়। যথা-
১) সরাসরি বীজ বপন পদ্ধতি এ পদ্ধতিতে বীজ উৎপাদনের জন্য মধ্য জুলাই থেকে আগষ্ট মাসের শেষ (শ্রাবণ থেকে ভাদ্রের মাঝামাঝি) পh©ন্ত কিছুটা উচুঁ এবং জলাবদ্ধতা মুক্ত জমিতে পাতলা করে (প্রতি শতকে 40-50 গ্রাম) বীজ বপন করতে হয়। 2) কাটিং বা ডগা রোপন পদ্ধতি গাছের বয়স 100-110 দিন হলে ডগা (1.5-2.0 ফুট) ধারালো ছুরি বা চাকু দিয়ে কেটে 3-4 টুকরা করে (প্রতি টুকরায় কমপক্ষে 3টি পর্ব থকাতে হবে) পর্যাপ্ত আর্দ্রতাসমৃদ্ধ জমিতে সারি করে উত্তর মুখী কাত (45 ডিগ্রী কোণ) করে 5-6 ইঞ্চি দুরে দুরে লাগাতে হবে। কাটিং লাগানোর আগে বড় পাতা গুলো ফেলে দিতে হবে। এ পদ্ধতিতে প্রতি শতক জমিতে 2.5-3.0 কেজি বীজ সহজেই উৎপাদন করা যায়। 3) চারা রোপন পদ্ধতি উচু জমিতে 3মি: x 1মি: সাইজের বীজতলা তৈরী করে আষাঢ় মাসে (15 জুন থেকে 15 জুলাই) বীজ বপন করে চারা উৎপন্ন করা হয়। চারার বয়স 30-35 দিন হলে চারাগুলো রোপনের উপযুক্ত হয়। মেঘলা দিনে অথবা সন্ধ্যার আগে যখন রোদ থাকেনা তখন চারা রোপন করা ভাল। বীজ ফসল সংগ্রহ ও বীজ সংরক্ষণ বীজ ফসল কেটে 2-3 দিন রোদে শুকিয়ে নিলে ফলগুলো ফেটে যায় এবং তারপর লাঠি দিয়ে মাড়িয়েং সহজেই বীজ সংগ্রহ করা যায়। গাছের শতকরা 70-80 ভাগ ফল বাদামী রং ধারন করলে গাচের গোড়া সমেত কেটে ফসল সংগ্রহ করহে হবে। পর্যাপ্ত শুকানো বীজ ঠান্ডা করে প্লাষ্টিকের ক্যান, টিন, কাঁচের পাত্র ইত্যাদিতে ভরে মুখ ভালভাবে (বায়ুরোধী) বন্ধ করে গরের মধ্যে এক কোণে ঠান্ডা স্থানে রাখলে 1/2 বছর বীজ ভাল থাকে। | |
9. জীবনকাল | : | 120-150 দিন (আশের জন্য) 150-210 দিন (বীজের জন্য) | |
10. ফলন | : | 2.80-3.৩0 টন/হে. |